শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ১০:২২ পূর্বাহ্ন

জীবন ঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী সিনেমা নির্মাণে চলচ্চিত্র নির্মাতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক, একুশের কণ্ঠ অনলাইন:: কিছুক্ষণ বাদেই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বসতে চলেছে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২২’-এর আসর। তার আগেই চলচ্চিত্র নির্মাতাদের প্রতি বিশেষ আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি চান, জীবন ঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী সিনেমা নির্মাণে এগিয়ে আসুক চলচ্চিত্র নির্মাতারা।

‘মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সকালে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২’ প্রদান উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এই আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে তিনি এ বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ও কলাকুশলীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দনও জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আগামী প্রজন্মের জন্য দেশকে একটি আধুনিক, জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চলচ্চিত্র নির্মাতারা জীবন ঘনিষ্ঠ ও বাস্তবধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণে এগিয়ে আসবেন। আমার প্রত্যাশা, দেশের সীমানা পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের চলচ্চিত্র যে সুনাম অর্জন করেছে, তা আরও উজ্জ্বল হোক।’

বঙ্গবন্ধু-কন্যা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে গত প্রায় ১৫ বছরে চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা গাজীপুরের কবিরপুরে ১০৫ একর জমির ওপর ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটি’ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই ফিল্ম সিটির আরও সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়নের জন্য ৩৭৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন প্রকল্পের কাজও শুরু হচ্ছে। বিএফডিসির নিয়মিত আয় বৃদ্ধি ও চলচ্চিত্র শুটিং স্পটের উন্নয়নসহ নানাবিধ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ প্রকল্প’ বাস্তবায়িত হচ্ছে।’

বিএফডিসির অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বৃদ্ধিকরণ এবং চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টেলিভিশন কেন্দ্রে এফডিসির কার্যক্রম সম্প্রসারণ নামক আরও একটি প্রকল্প বর্তমানে অনুমোদনের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা অত্যাধুনিক বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ করেছি। আমরা সুস্থ ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদানের পরিমাণ বৃদ্ধি করেছি। চলচ্চিত্রকে আমরা ‘শিল্প’ হিসেবে ঘোষণা করেছি। জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা ২০১৭ প্রণয়ন করা হয়েছে। আমরা চলচ্চিত্র শিল্পে মেধাবী ও সুদক্ষ কর্মী সৃষ্টির জন্য ফিল্ম ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছি। অসচ্ছল চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের আমরা নিয়মিত অনুদান দিয়ে যাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেন্সর সংক্রান্ত আইন ও বিধি আধুনিকভাবে তৈরি করেছি। চলচ্চিত্রের সেন্সরের পরিবর্তে সার্টিফিকেশন প্রথা চালু ও বিদ্যমান আইন আরও যুগোপযোগী করে প্রণীত আইনের খসড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক অনুমোদিত হয়েছে। অশ্লীল চলচ্চিত্র নির্মাণ, প্রদর্শন ও পাইরেসি নিয়ন্ত্রণে গঠিত ‘টাস্কফোর্স’ এর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ফলে চলচ্চিত্রের পাইরেসি অনেকাংশে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে। সেগুলো যেন কঠোরভাবে মানা হয় সেদিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে তার জীবনী নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত চলচ্চিত্র ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ দেশের এবং দেশের বাইরের ছয় শতাধিক হলে প্রদর্শিত হয়েছে।’

ভারতে বাংলা ও হিন্দি ভাষায় মুক্তি পেয়েছে ‘মুজিব’ বায়োপিক। এর নির্মাতা বিখ্যাত ভারতীয় পরিচালক শ্যাম বেনেগালের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটি একটি শ্রেষ্ঠ অর্জন বলে বিবেচিত হবে। এই সিনেমা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আমাদের চলচ্চিত্র দেশজ উপাদানে সমৃদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের যাত্রাপথের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরবে, জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।’

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ২৭ মার্চ তৎকালীন প্রাদেশিক আইন পরিষদে ‘পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা বিল ১৯৫৭’ উপস্থাপন করেন, যা সে বছরের ৩ এপ্রিল পাস হয়। গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা, যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের ভিত্তি।’

চলচ্চিত্রের বিভিন্ন শাখায় বিশেষ অবদান রাখায় এ বছর ২৭টি ক্যাটাগরিতে মোট ৩২টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীরে উপস্থিত হয়ে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন। থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com